একটি ছোট কষ্টের কাহিনী
একটি ছেলে যার ছিল অনেক স্বপ্ন।
অনেকের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে। এই
কারনে তার ফেসবুক এ আইডি খোলা।
তার নাম ছিল রাফা। সে স্কুল-এ খুব
চুপচাপ থাকতো। স্কুলে ছিল তার
অনেক বন্ধু। কিন্তু সবাই ছিল ছেলে।
কোন মেয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়নি।
ফেসবুক আইডি খুলেছে সে ২০০৯
সালে। তখন সে প্রতিদিন এ সাইবার
ক্যাফ-এ গিয়ে ফেসবুক ব্যভার করতো।
সে কখনো ভাবে নি যে তার আজ এই
পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে। তখন
তার ফেসবুক আইডি তে ও কোন
মেয়ে বন্ধু ছিল না। ঈদের
ছুটিতে বাড়ি যায় সে।
জানতে পারে যে তার
মামাতো ভাইয়ের ফেসবুক
আইডি আছে। ভাইকে তার ফ্রেন্ড
লিস্ট এ অ্যাড করল সে। তার ভাই
তাকে পরিচয় করিয়ে দিলো তার
অনেক বন্ধু-বান্ধব এর সাথে।
সাথে তার জিএফ এর সাথেও।
রাফা তার ভাই এর জিএফ
কে ভাবি বলে ডাকতো FB তে ।
সামনাসামনি তাদের এখন দেখা হয়
নি। রাফা অনেক দুস্টামি করতো তার
ভাবির সাথে। হঠাৎ একদিন তার
ভাবি তাকে বলল তোমার জিএফ
নাই। সে সরাসরি উত্তর দিলো না। ওর
ভাবি একজন এর প্রফাইল লিঙ্ক
দিয়ে বলল তোমার মত আমার এই
বান্ধবীটিও একা।
রাফা তাকে ফ্রেন্ড রেকুয়েস্ট
পাঠায়। মেয়েটি এক্সেপ্ট করে। তার
নাম তানি। তাদের মধ্যে অনেক দিন
কথা হয়। তানি কে তার খুব
ভালো লেগে যায়। কিন্তু সাহস
হয়নি কখনো বলার। এমন করে অনেক
দিন কেটে গেল। রাফার SSC
পরীক্ষা এসে পরে। পরীক্ষার
আগে একদিন সাহস
করে তানি কে তার ভাল লাগার
কথা বলে। তানি ৩ দিন এর সময় নেয়।
এর পর এর কাহিনী আমি আগামি কাল
লিখব…………… ৩দিন সময় নিয়ে সে আর
আসে না… ৩দিন এর জায়গায় ১৫দিন
পার হয়ে যায়। কিন্তু তানি এখনও
অনলাইন এ আসে নি। আমি আমার
বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি।
তানি কে পাব না বলে ধরে নিলাম।
তখন এত কষ্ট লাগে নি। ৩সপ্তাহ পর …………
একদিন দেখি তানি অনলাইন এ।
আমি তাকে কিছু বললাম না।
সে আমাকে বলল আমি তোমার
প্রোপজাল আমি এক্সেপ্ট করলাম।
আমি তখন ও এত খুসি হয় নি।
আমি তানি কে জিজ্ঞাসা করলাম,
এত দিন কোথায় ছিলে??
তানিঃ হ্যাঁ বলব নাকি না বলব
তা চিন্তা করতে করতে আমার জ্বর
এসে গিয়েছিল। তাই
আস্তে পারি নি। এর পর থেকে অনেক
কথা হত আমাদের। S.S.C পরীক্ষা শেস
হওয়ার পর একটি মোবাইল কিনলাম।
তানি আর আমি এবার
মোবাইলে কথা বলেই দিন
কাঁটিয়ে দিতাম। এভাবে ৫ টা মাস
পার হয়ে গেল…… তানির
ফেমিলি থেকে চট্টগ্রাম
আসছে সবাই। আমাদের দেখা করার
সুযোগ হয়ে এলো। তানি তারিখ
ফিক্সড করে জানায়। আমদের সুন্দর
ভাবে দেখা ও হয়। আমার জীবনের
এইদিনটি অতি গুরুত্তপূর্ন। আমি অন্য
দিনের কথা ভুল্লেও এইদিনের
কথা ভুলবো না। জীবনে এই প্রথমবার
সরাসরি কোন সমবয়সী মেয়ে এর
সাথে কথা বলছি তারপর আবার
আমি তাকে ভালবাসি। তখন
জানি না আমি কোন
দেশে হারিয়ে গিয়েছিলাম।
একে অন্যের হাত ধরে অনেক্ষন
বসে ছিলাম। অনেক একে অন্যের
চোখের দিকে তাকিয়ে আছি।
তারপর দিন সে আবার ঢাকায়
চলে গেল। আমার খুব দুঃখ হচ্ছিল যখন
তানি চলে যাচ্ছিলো।
মোবাইলে কথা বলতাম। তারপরও
কেমন জানি লাগতো আমার। শুধু
দেখা করতে ইচ্ছা করত। হঠাৎ একদিন
তানি এর কোন খোঁজখবর নেই। কল
ধরে না। কল ও করে না। আমি তো খুব
চিন্তিত। ৮ দিন পর কল এলো তার
নাম্বার থেকে। কিন্তু কন্ঠটা তার
না।
কান্না কান্না কন্ঠে সে মেয়েটি
বলল… ভাইয়া, আপু আর নেই।
আমি প্রথমে বুঝলাম
না কি বলতে চাইছে।
জিজ্ঞাসা করলাম সে কে? উত্তর
আসলো সে তানির ছোট ভোন।
তানি কোথায় জিজ্ঞাস করতেই
উত্তর দিল আপু আর পৃথিবীতে নেই। এ
কথা বলেই কেঁদে দিলো। আমার
মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।
আমি ঢাকায় যাওয়ার অনেক
চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না।
আবার অই নাম্বার এ কল দিলাম।
জিজ্ঞাসা করলাম
কিভাবে মারা গেল। বলল ৯ দিন
আগে এক্সিডেন্ট হয়েছিল। গতকাল
কথাও বলেছে। কিন্তু আজ সকাল
৭টা থেকে আবার আগের অবস্থায়
ফিরে গেল। অবস্থা খারাপ এর
পথে যেতে থাকে এবং ১১ টার
দিকে মারা যায়। আমার জীবনে এত
দুঃখ কখনও পাইনি। অনেক কষ্টে দিন
কাটাচ্ছিলাম। হঠাৎ একদিন তানির
নাম্বার থেকে ১টা মেসেজ আসলো,
যা পাঠিয়েছে তার ছোট ভোন।
লেখা ছিল “ ভাইয়া, ওই দিন
আমি আপনাকে সব
কথা বলতে পারি নাই। আপু আমার
কাছে আপনার জন্য একটা মেসেজ
দিয়ে গিয়েছিল। মেসেজ টা হল “
আমার মনে হয় চলে যেতে হবে।
তুমি আমার জন্য কাদবে না। আমার মত
অথবা আমার থেকে আর ভাল কাও
কে পেলে জীবন সাথী করে নিও।
আমার কথা মনে করে কখনও
কাদবে না, মন খারাপ করবে না।
যদি বেঁচে থাকি তাহলে দেখা হবে
ইনশাল্লাহ।“” এই মেসেজ পরে আমার
আরও কান্না পেল। কষ্ট
নিয়ে কাটিয়ে দিলাম এতটা দিন।
তবে দুঃখ টা আরও বেড়ে গেল গত
মাসের ২৮ তারিখ। আমি আমার বন্ধু
আশিক, আসিফ, সজল এর সাথে অনেক্ষন
দুষ্টামি, আড্ডা করে বাসায়
ফিরলাম। কিন্তু ঘরে ডুকতেই কারন্ট
টা চলে গেল। আমি আবার
আড্ডা দেওয়ার স্থান এ
গিয়ে বসলাম। ঠিক
তখনি আমি দেখতে পেলাম আমার
সামনে একটি গাড়িতে বসে আছে।
আমি আমাকে বিশ্বাস
করতে পারলাম না। তখনি আমি আমার
মোবাইল থেকে তানি এর নাম্বার এ
মিস কল দিলাম। দেখলাম ওই
মেয়ে টা তার মোবাইলটি হাত এ
নিলো। আমি আবার মিসকল দিলাম।
আবার সেই মেয়েটি মোবাইল হাত এ
নিলো। আমি পুরো সিউওর
হয়ে গেলাম এটা তানি।
আমি অনেক্ষন তার
দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর
কাঁদছিলাম। হঠাৎ বুঝলাম তানিও
আমাকে দেখেছে।
সে গাড়ি থেকে বের হয়ে এলো।
আমি মনে করেছিলাম ও আমার
দিকে আসবে। কিন্তু না সে তার
গাড়িতে ঢেলান
দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো আর আমার
দিকে তাকিয়ে রইলো।
তানি কে দেখে তখন আমার খুব
ঘেন্যা হচ্ছিলো। আমার
সাথে অনেক খারাপ কাজ
করেছে সে। আমি ঐ স্থান
থেকে সাথে সাথে চলে এলাম…
চলে আসার সময় আমি পেছন
ফিরে তাকালাম। দেখলাম
সে আমার
দিকে তাকিয়ে আছে……………………………..
…….