প্রশ্ন করোনা – ১০

প্রশ্ন করোনা
কেন আমার ভালোবাসায় বেড়ে ওঠা জল হাওয়া মাটি মানুষ
দৈত্য দানব বনে যায় শেষে, হয়ে উঠে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন!
আমি কেন ভাবি – ভালোবাসা? এরও কোনো মানের হয়? আত্বার অবয়ব?
জলের ছায়ায় নিজের মুখটা খুঁজি, সেই ভালোবাসার ছায়ায়, কোথায় আমি?
জানি – ঈশ্বরও মাঝে মাঝে, সৃষ্টিতে তার প্রতিফলন দেখতে পায় না;
কেন আমি আর সৃষ্টি করতে চাই না, ভালোবাসার কোন ডাকাতিয়া?
কেন আবার দ্বিচারিতা – আশায় থাকি – ঈশ্বর হতে – অন্য কোন নদী
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন আমার নিথর দেহ, নিজেই নিজের কাঁধে নিয়ে বয়ে বেড়াই অনন্তকাল
দেবদূত’রা ঘিরে ধরে আমায়, কে জানে কোন ঐশরিক যানে তুলে দিতে চায় !
আমি কেন সেই কৈশোরের ছোট্ট এক রেল স্টেশনে বসে? একা, নির্ভিক
নিজের কাঁধে নিজে – অপেক্ষায় থাকি অলৌকিক প্রাণ ভ্রমরের খোঁজে;
কেন পালিয়ে যাই না, অথচ চাঁদের দিকে তাকিয়ে ভাবি, ও পালাবে একদিন
কেন বনে যাই না, না পাহাড়ে, না সমুদ্রে – একলা বাড়িটার টান – টানে না এখন
কেন নিজেকে ফেলে নিজে এগিয়ে যেতে পারি না, পারিনা ঝেড়ে ফেলতে সব
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন তোমাকে খুঁজে পাই না আমি এখন, সেই আর আগের মতো করে?
কেন বিশাল বট বৃক্ষের সবুজ পাতা গুলিকে “সবুজ না” বলে ছিড়ে ফেললে ?
কেন বিষ মাখালে সেই বট মূলে – যে একমাত্র গাছটিই – ছায়া দিয়েছে তোমায়?
শুনেছি অপচ্ছায়া, প্রেতাত্মা এখন তোমার ড্রয়িং রুমে সাজানো – বনসাই বট
শুনেছি স্বেচ্চারিতা এখন তোমার ভালোবাসা – অধিকার তোমার অভিভাবক
দু’হাত দিয়ে আকাশ ছুতে পারো তুমি এখন – পা’জোড়া গভীর সমুদ্রের তলদেশ
কেন যে তোমার পা’জোড়া মাটিতে পড়ে না, দু’হাত ছোঁয় না মাটি – আত্মাকে
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন আমি আর ওই নদীটির পাড়ে দাঁড়াবো না আর, খেয়া পারাপারের আশায়
নদীটাকে নিয়ে হয়তো আর লিখবোনা কোনো গান, মুসল বৃষ্টি বা উত্তাল বর্ষায়
দেখতে চাইবো না, ওপারে কে যায়, কে আসে ফিরে, আমার প্রিয় মাঝিটার নৌকায়
যাত্রী যে যার যাত্রায় ব্যস্ত হবে – ব্যস্ত থাকবে নিজেকে নিয়ে – যে যার মতো করে!
কাক, চিল কিংবা কোকিল কে উড়ে গেলো কার আকাশে – কি যায় আসে তাতে;
হয়ত সেই নদী পাড়ের মন্দিরটায় আমিই যাবো একা একা – মৃত আত্মার ভিড় ঠেলে
কেন নিজেই পুরোহিত হয়ে বেঁধে দিতে পারি, অন্য কারো হাত, অন্য কারো হাতে
কেন আমি ওই কল্পিত বিশাল আকাশটাকে গায়ে জড়িয়ে পার করে দিবো ছয়টি ঋতু
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
এ কেমন জীবন চেয়ে বসে আছি ঈশ্বরের কাছে আমি অথবা ঈশ্বরই
কেন বেঁধে দিয়েছে এই মাকড়সার জালে – কীট পতঙ্গের আনাগোনায় শুধু
হেঁটেই চলেছি, হেঁটেই চলেছি – জলের উপর হেঁটেই চলেছি এখনো;
কে জানে, আমার গন্তব্য যে খানে শেষ, হয়তো সে খানেই পথ চলা শুরু ভালোবাসার
অনাগত সুখের শতাব্দী ওখানেই পার হবে হয়তো – আমি শব বাহকের পালকিতে
ধীর, কি দ্রুত লয়ে বাহকেরা চলে যাবে – বাউলি – কি যায় আসে তাতে এই বাউলের ?
কি আসে যায়, একতারাতে – কি আসে যায় ধুলো মাখা পথ – নদীর বুকে জমে বালি
ওই নীল আকাশকে নিচে, পাখিদের সাথে উড়ে বেড়াবার মন্ত্রটা খুঁজি না এখন – কেন?
প্রশ্ন করোনা

ক্যানবেরা
০১/০২/২০১৮

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes