স্বাধীনতার রক্ষক

স্বাধীনতার রক্ষক
লেখাঃ অনিক শিকদার

জননী তোমার মাটি এখনো শুকোয় নি,
এখনো দূর্বাদল রক্তের কুয়াশায় সিক্তপ্রায়।
দেশকে আমরা স্বাধীন করেছি মা, কিন্তু
আজও জানা হয়নি স্বাধীনতা কি?
আমার বোনের ইজ্জত আজও লুণ্ঠিত,
ভাইয়েরা সব বেকারত্বের বাজারে ক্ষুধার্ত,
মা, কারিগর কি খেয়েছে দুপুরবেলা?
নাকি সে গত তিন দিনের মত আজও রিক্ত?
দাদাভাই তো চশমার দোকানে গিয়েছিল,
সে কি মা এখনো আসেননি?
নাকি কোন এক রাস্তার পাশে টাকা ধার চাচ্ছে?
এখন আর দাদাভাই পুঁথিপাঠ করতে পারে না,
কারিগরও আর খৎনা করাতে যায় না,
মিনা ফুফুর তো বিয়েই হলো না!
আজকাল নাকি মুক্তিযোদ্ধাও কিনতে পাওয়া যায়।
পিতার হত্যার বিচার হয়, তবে আগের পৃষ্ঠা নেই।
বদর-শামস একফসময় মুক্তিযোদ্ধা হবে,
চালের মূল্যে হিমালয় লেখা যাবে,
কিন্ডারগার্টেন-ব্যবসার পুঁজিতন্ত্র বিপ্লবে
সভ্যতার অসভ্য-আচরণ বিস্ফোরণ ঘটবে।
তবুও আমরা বলে বেড়াব শ্লোগান দিয়ে,
রক্ত একবার দিয়েছি, আরো শতবার দেবো।
কিন্তু এই কি সেই স্বাধীনতা?
যা সাত কোটি মানুষ চেয়েছিল,
যার জন্যে আমার ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছিল,
মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছিল!
তবুও ভ্রম মনের পাহাড়ের গিরিখাতে
আগ্নেয়গিরি হয়ে মন-পাহাড় কাপিয়ে দেয়।
নিজেকে স্বাধীন বলে বেড়াই মায়ের বুকে,
স্বাধীনতার দীনতা নখদর্পণ আঁকে।
আফসোস করে দাদাভাই বলে-
নাতি, কামারের কাছে কোরান পাঠে কি লাভ হবে?
নির্বোধ জাতি অর্জনকারী,
রক্ষক হতে শতাব্দী দেরি।

১৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৪
নারায়ণগঞ্জ

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes