মাঠে মাঠে সোনা ধান……. হেমন্তের গান (দশম পর্ব)
তথ্য সংগ্রহ, সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
হেমন্তের সকাল।পাকা ধানে ভরা মাঠ। হেমন্তে ভোরের আকাশ কুয়াশার আবিরে ঢাকা। কাদা জলে আধা ভেজা ধানের নাড়া শিশির ধোয়া সিক্ত আলের পথ; দিঘির টলটলে জলে শিহরণ তোলে; ধুলার আবির মাখা মেঠোপথে গোরুর গাড়ি চলে। কৃষকেরা মাঠে মাঠে ধান কাটে। আঁটি বাঁধে। তারপর ঘরে নিয়ে আসার পালা। ধানের বোঝাই করা গরুর গাড়ি চলে মেঠো রাঙাপথে।
গ্রামে গ্রামে খুব ভোরে খেজুর গাছ হতে রসের হাঁড়ি নামিয়ে আনতে ব্যস্ত হন চাষীরা। রাতের এ হিমশীতল রস ভোরে ঠান্ডায় গাছ থেকে নামিয়ে খাওয়ার যে স্বাদ তা একেবারেই যেন অন্যরকম। তাই রস খাওয়ার কোন বিরাম নেই। এক বা দুই গ্লাস খাওয়ার পরপরই কাঁপতে কাঁপতে যেন আরও এক গ্লাস মুড়ি মিশিয়ে মুখে তুলে চুমক দেয়া আর রোদ পোহানো সে যে কি আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায়না।
অজয়ের নদীঘাটের নৈসর্গিক দৃশ্য অতি মনোরম।যাত্রীরা মাথায় বোঝা নিয়ে হিমশীতল জলে পায়ে হেঁটে নদী পার হয়। পূবের আকাশে লাল হয়ে সূর্য ওঠে। সোনা রোদ হাসে অজয় নদীর চরে। অজয় নদীর বাঁকে শাল পিয়ালের বন। রাঙাপথের দুধারে ধানের খেত। ধানের খেতে মেতে ওঠে ভোরের হাওয়া। নতুন ধানের গন্ধ ভাসে আকাশে বাতাসে। চাষীর আনন্দ আর ধরে না।

মাঠে মাঠে সোনা ধান….. হেমন্তের গান
গীতি কবিতা-১০ (দশম পর্ব)
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
কৃষকের হাসি মুখ,
গর্বে ভরে উঠে বুক,
মাঠে মাঠে ভরা সোনা ধান।
ওঠে রবি পূর্বাকাশে,
পড়ে হিম দুর্বাঘাসে,
সোনারোদে মেতে ওঠে প্রাণ।
দূরে ওই রাঙা পথে,
আনে জল নদী হতে,
গাঁয়ের বধূরা আসে ঘরে।
দুধারে ধানের খেতে,
সমীরণ ওঠে মেতে,
বাঁশির সুরেতে চিত্ত ভরে।
কৃষকেরা মাঠে মাঠে,
সারাদিন ধান কাটে,
আসে ঘরে সাঁঝের বেলায়।
অজয়ের নদীতটে,
কলকল শব্দ ওঠে,
অজয় বেগেতে বয়ে যায়।
পূর্ণিমার চাঁদ উঠে,
লক্ষ তারা উঠে ফুটে,
একে একে আকাশের গায়ে।
সারারাত নদী বাঁকে,
শেয়ালের দল হাঁকে,
কুকুরেরা কাঁদে পথের বাঁয়ে।
