এই মেয়ে তোর বাড়ি কোথায় ?
কি জানি গো!
জানলে ঠিকই বলে দিতাম।
কার যেন এক পাপের ফসল
এখন বুঝি টাকায় উসল।
পলিথিনের পোষাক গায়ে
ডাষ্টবিনে ফেলে রাখে!
খাবার খোঁজা কুকুরগুলো
উকিঝুকি করলো শুরু,
আসলো কাছে এক রাত্রিওয়ালা
আদর যত্ন করলো মে-লা।
এই মেয়ে! তোর নাম কি গো ?
আমার আবার নাম!
নাম তো আছে অনেকগুলি
লতা পাতা ফুলের কলি,
কোনটা রেখে কোনটা বলি।
রাত্রিওয়ালার কুসুমকলি
পিছে ঘুরে কত্ত মালি,
প্রাক বয়োসন্ধিতে হলাম বলি।
যা হবার তাই হলো
গায়ের রূপটি আমায় খেল।
কাছে ডাকে আদর কষে,
পেটে পিটে নরম পাচায়
নানা ছুতোয় গা ঘষে।
বালির বাধ আর কয়দিন টেকে!
নিত্য ঘষায় পাথরও ধ্বসে
হঠাৎ একদিন ঘুরলো মাথা
শুরু হলো জীবন খাতা,
নাম হলো কুমারিমাতা।
আসলো চলে গ্রামের মাথা
হর্তা-কর্তা কত বিধাতা!
বিচার সালিশ সবই হলো,
কলঙ্কিনী নাম দিয়ে
বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলো।
দিশেহারা ভবঘুরে
ইষ্টিশনের জীর্ণঘরে
ঝাপটে ধরে শেয়াল শকুনে,
হঠাৎ দেখি শুয়ে আছি
হাসপাতালের একটা কোণে।
এই মেয়ে! তোমার বাচ্চাটার কি হলো গো ?
তার কপালটাও আমার মতো
দগ্ধ হলো মায়ের ঋণে,
ঠাই হলো এক ডাষ্টবিনে।
কারো কাছে আছে হয়তো
এঁটো বাসি খাবার চেটে,
নয়তোবা সে সুখেই আছে
শেয়াল কুকুরের ছোট্ট পেটে।
এই মেয়ে! তারপর তোমার কি হলো গো?
কি আর হবে! যা ছিল মোর এই কপালে!
গা ভাসালাম হাওয়ার তালে।
এ হাত ও হাত ঘুরিফিরি
শরীরটাকেই বানাই পুঁজি,
এমনি চলে কামাই-রুজি
রূপ যৌবনেই জীবন খুঁজি।
অন্ধ সমাজ দিচ্ছে থাবা
মেয়ে-মানুষ মদ আর ইয়াবা,
বাঁচার জন্য এই জগতে
অবশেষে বারবনিতা।
অবাক লাগে ভীষণ রকম
যারা আমায় করলো জখম
ভদ্রবেশী আইন প্রণেতা,
ওরাই চালায় সমাজটারে
আঙ্গুল তোলে কয় পতিতা!