আমি হাঁটছি,ঘামঝরানো রোদে,
ক্ষুধার ক্রোধে রগগুলো ফুলে উঠেছে-
ছাতা নেই আমার,কিনি না।
পানির বোতল নেই-চিনি না,সেটা কি!
আমি মধ্যবিত্ত!
চিত্তে নিত্য খেলা করে অবিরাম,শত কল্পনা।
মরুবাস্তবতায় মন আল্পনা আঁকে কত;
ধুলিঝড়ে মুছে যায় আবার,হয়ে যায় নিশ্চিহ্ন।
তিনচাকাওয়ালা রিকশা চলছে ঘোমটা দিয়ে,
আমার স্বপ্নগুলো জমেছে ওই ঘোমটায়,
পাশে বসা এক অর্ধাঙ্গী!
অপরুপা ওই সঙ্গী শুধুই স্বপ্ন,সে স্বপ্ন-
যত্ন করার সামর্থ্য আমার নেই।
বারেবারে ফিরে আসি তাই তপ্ত পিচে হাঁটায়!
আমার বাবা-
দারিদ্র্যের থাবাগ্রস্থ এক ফেরিওয়ালা,
প্যাডেলের জোরে নিত্য পথচলা তার।
ছেলে বিদ্যাসাগর হবে,এই তার স্বপ্ন।
জঘন্য এ স্বপ্নের জন্য-
তার রক্তগুলো ঘামের ফোঁটা হয়ে ঝরে নিয়ত।
কোনো এক তপ্ত দুপুরে,তার অবিরত
হাঁকে তৃষ্ণার্ত কাকটাও পিলে চমকে যায়!
তবু চলে স্বপ্নবোনা,
গোনা থামে না প্রহর,
আমার স্বপ্নের কারিগর বাবার।
অথচ,প্রতিটা প্রহরই অনিঃশেষ যন্ত্রণাময়-
ক্ষয় করে দেয় ভেতরটা।
আমি মধ্যবিত্ত!
নিত্য কত কিপটেমি করে বেড়াই!
নগরীর ধুলি তার সাক্ষী-
ছেঁড়া জুতো আর মলিন প্যান্ট
সে ধুলির আপনজন।
ক্ষণ গুনি আমি মগজের হিসেবমেশিনে-
কিভাবে চলবে মাসের শেষক’টা দিন
শুধিবো কিভাবে বাবার ঘামঝরানো ঋণ!
কঠিন বাস্তবতায় এভাবেই চলে যায় দিনকাল,
নাজেহাল আমার মতোই শত মধ্যবিত্ত।
আদিত্যও তা জানে না-
আমার সেই জ্বালাময় কল্পনার কথা,
দপ করে জ্বলে উঠে যা,
অবিরত নিভে যায়-
সেসব তবু কল্পনায় বাস্তব করি নিয়ত।