অজয় নদীর বাঁকে

অজয় নদীর বাঁকে

– লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

 

গাঁয়ের পাশে অজয় নদীর বাঁকে,

সাঁঝের বেলা নদীর ঘাটে নৌকা বাঁধা থাকে।

রাত কেটে ভোর হলে

আসে যাত্রী দলে দলে,

তরুর শাখে পাখিরা সব কিচির মিচির ডাকে।

বনটিয়ার দল নদীর ধারে আসে ঝাঁকে ঝাকে।

 

গাঁয়ের পাশে অজয় নদী চলে,

কেউবা বলে নদ তারে আবার কেউবা নদী বলে।

সকাল হলে গাঁয়ের মাঝি,

ভাসায় জলে নৌকা আজি,

যাত্রী বোঝাই নৌকাখানি অতি মন্থর বয়ে চলে।

পাল তোলা নাওখানি ভাসে অজয় নদীর জলে।

 

সকাল হলে লাল সূর্য ওঠে,

চিক চিক করে সরু বালি অজয় নদীর তটে।

নদীর ঘাটেতে ধবল বলাকা,

আসে উড়ে মেলে দুটি পাখা,

শালিক আসে ঝাঁকে ঝাঁকে কূলে কাশফুল ফোটে।

রাখাল ছেলে বাজায় বাঁশি গরু বাছুর চরে গোঠে।

 

গাঁয়ের বধূ কলসী লয়ে কাঁখে,

রাঙাপথে জল নিয়ে যায় ঘোমটায় মুখ ঢাকে।

দূরে পথিক আদুল গায়ে,

বসে বটের শীতল ছায়ে,

গরুগাড়ি ধুলো উড়ায়ে ছুটে চলে পথের বাঁকে।

নদীর কাছে শ্মশানঘাটে মৃতদেহ জ্বলতে থাকে।

 

নদীর ঘাটে দুপুর হলে পরে,

গাঁয়ের বধূরা রোজ নাইতে আসে রাঙা শাড়ি পরে।

সেই নদীতে গাঁয়ের জেলে

মাছ ধরে ওরা জাল ফেলে

শঙ্খচিলেরা পাখা মেলে নীল আকাশ পানে উড়ে।

বনের ধারে বাঁশির সুরে মোর পরান পাগল করে।

 

বিকাল হলে পড়ে আসে বেলা,

নদীর ধারে সবুজ মাঠে পাড়ার ছেলেরা করে খেলা।

পশ্চিম কোণে সূর্যটা লাল হয়ে,

ডুবে দেখি নীলপাহাড়ের গায়ে,

নদীর ঘাটে আঁধার আসে নেমে, হলো সাঁঝের বেলা।

নির্জন ঘাটে রাত্রি নামে নীল আকাশে তারার মেলা।

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes