জাগো ভারতের নারী
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি কভু পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।
সতী সাবিত্রীদের হরিছে রাবণ, বাংলার ঘরে ঘরে,
ওদের আঘাতে কত ফুলকলি অকালে গেছে ঝরে।
কলির দুঃশাসন, মানে না শাসন করিছে বস্ত্রহরণ,
কোথা হে কৃষ্ণ! আগুয়ান হও করো লজ্জা নিবারণ।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি কভু পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।
রাতের আঁধারে নারীদের ইজ্জত লুণ্ঠণ করিছে যারা,
দিনের আলোকে সাধুর বেশে দেশশাসন করে তারা।
দিকে দিকে চলে নারী-নির্যাতন শুনি তার কোলাহল,
মোছ আঁখিজল জ্বালো দুচোখে প্রতিশোধের দাবানল।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি কভু পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।
নর-পশুর দল এসেছে হেথা এই বসুধার সাগরতীরে,
সতীত্ব হারায়ে বঙ্গ-ললনা ভাসিছে আজি আঁখিনীরে।
নরপশুদের নখের প্রহারে জর্জরিত শত রমনীর দেহ,
মায়ের জাতিকে ব্যথা দেয় ওরা, নাই মমতা ও স্নেহ।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি কভু পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।
গায়ের জোরে দিনকে যারা করেছে অমানিশা রাত,
মুখোশ খুলে দেখিবারে পাই ওরা হল পশুর জাত।
নর-দানবে বধিতে হেথায় এসো মহামায়ার দল,
শক্তি লভিয়া, মহাস্ত্র ধরিয়া, দেখাও রমণীর বল।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি কভু পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি স্মরি ব্যথা পাই মনে,
লাজে মুখ লুকায় অরুণ রবি পূব আকাশের কোণে।
ওদের ব্যথা বোঝেনা কেহ ভাসে ওরা আঁখি জলে,
আমার লেখনী অশান্ত হয়ে শুধু তাঁদেরই কথা বলে।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি কভু পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।
বিদ্রোহ আজ কবিতার পাতায় হেরি তাদের মলিনমুখ,
মাতৃজাতিকে ব্যথা দিলে তাই দুঃখে ফাটে মোর বুক।
নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত আজি ভুলতে কি আর পারি?
নতুন করে বিদ্রোহ আজিকে জাগো ভারতের নারী।