প্রশ্ন করোনা – ৭

প্রশ্ন করোনা
কেন আমার আবেগের হাত তোমায় ছুতে চায় না আর
নিলামে চড়াই আমার অক্ষমতা, তোমার ভালবাসা,
কেন কান্নার নোনা জল শুকিয়ে হীরা হয়
কেটে ছিড়ে, রক্তাক্ত করে অন্ধের এই চোখ জোড়া;
কখন যে আবার ছুতে চায় তোমায়, আমার অচেনা হাত
তোমার চোখের দিকেই তাকাতে চাই অন্ধ আমি
কেন একবার উত্তরে, একবার দক্ষিনে বিরামহীন দৌড়ে চলি
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন ভীত কাপুরুষ আমি, যখন তখন কেপে উঠি
কেন ভাবি, বুক পাজরে কেউ আমার, ঘুমিয়েছে
কেন জাগাতেও ভয় হয় এই প্রাকৃতীক বন্য অরন্যকে;
কেন খুজি কি দিয়ে পৃথিবীকে ছোট করে বুক পকেটে রাখা যায়
অথবা ভাবি বাতাসের কনা হবো, হয়ে জড়াবো তোমার গায়
কেন লুকাই, অথবা নিজেকে লুকিয়ে রাখি – এই পৃথিবীতে
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন নিজেই নিজেকে দেখতে চাই না, আর সশরীরে
কেন শুনতে চাইনা নিজের কন্ঠের কোন মায়ার শব্দ
কেন আগে থেকেই হাত বাড়িয়ে থামিয়ে দেই শ্যাম স্তবকে
কেন বলি সবই কল্প কাহিনী – আত্মার কি আত্মীয় হয়!
কেন বর্নহীন মানুষ খুজি, নানান রঙের মানুষ মানুষে
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন আমি দাড়িয়ে সাত সাগর আর তের নদী’র ওপাড়ে
কেন আমি স্বচ্ছ নীল পানিতে বাদামীর ছোঁয়া খুজি
কেন বধির হই “সুরের আকাশে এ কোন শুকতারা”
কেন এখনও নতুল কাউকে দেখলেই বলি
তোমার পায়ে কি এতটুকু দেশের মাটি লেগে আছে?
লেগে আছে গায়ে, আমার বাউলির মাতাল হাওয়া!
কেন এমন অবুঝ শিশু হয়ে যাই
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন অভিমান হয় না আগের মত আর
কেন ভাবি, কি আর হতে পারে এই নির্বাসনের বাইরে
অথৈই পানি; বিশাল হাতী কি সামান্য শিকলে বাধা থাকে নাহ!
কেন পুড়ে যাই না, শিকলে বা ড্রাগনের অগ্নি নি:স্বাসে
কেন একই সদর দরজা, নানান রঙে সাজাই প্রতিদিন
কেন নতজানু আমি আর মাথা তুলতে চাই না
দেখতে চাই না, অন্য কোন গ্রহ, তার দীর্ঘস্বাস।
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
আমার প্রিয় একলা চলার পথ গুলি এখনো আছে কিনা
কে হাটে আমার সেই প্রিয় ধুলি মাখা পথে এখন
কেন সবুজ ফসলের মাঠ উজাড় হয় কালো ধুয়ায়
কেন কেরশিনের সন্ধ্যা প্রদীপ খুজি, মনে মনে জোনাকিদের
কেন এখনও খেয়া পাড়ি দিতে চাই তোমার সাথে
প্রশ্ন করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes