বাবা নেই যার

বাবা নেই যার     ।।।   শফিক তপন
(উৎসর্গ : পৃথিবীর প্রত্যেক বাবাহারা মেয়েকে )
————
সন্তান যেমন বাবা মায়ের কাছে অতি প্রিয়, তেমনই সন্তানের কাছেও বাবা মা অতি প্রিয় । বিশেষ করিয়া মেয়েরা যখন বিবাহের পর বাবার ঘর ছাড়িয়া স্বামীর ঘরে প্রবেশ করেন তখন বাবার সকল স্নেহ, মায়া মমতা আদর, ভালবাসার স্মৃতি নিজের অন্তরের অন্তস্হলে উচ্চ পবিত্র এক আসনে জমা করিতে থাকেন । মেয়েরা মায়ের জাতি বিধায় বোধ করি মায়ের চাইতে শতাধিক বাবার মায়া মমতার অভাবের শূন্যতা সারা জীবন নীরবে নিভৃতে অনুভব করিতে থাকেন । তাহারপর বাবার আকস্মিক মৃত্যুকে কোন ভাবেই নিজেকে মানাইতে পারেন না । বাবার মৃত্যু শোকে মেয়েরা নিজেরা যেন ভিতরে ভিতরে ঝরিয়া পরিয়া নি:শেষ হইয়া যায় । শুন্য হৃদয় বেদনায় বিধূর, কাঁদিয়া কাঁদিয়া একাকার; সহিতে পারেনা ব্যাথা ভার । এই শূন্যতা এক অসীম শূন্যতা, গভীর নীল আকাশের মত বিশাল ও বিস্তৃত; প্রত্যেক মেয়ের অন্তর যেন খা খা করিয়া পুড়িয়া মারিতে থাকে । এই অভিজ্ঞতা কাহাকেও বলিবার নহে, কাহাকেও কহিবার নহে; যেন একান্ত নিজের হৃদয়েই অনুরণিত হইতে থাকে এক অন্তহীন জ্বলাময় নীরব মর্ম বেদনায় । যখন আস্তে আস্তে এই অদৃশ্য অলিখিত করুন মর্মান্তিক কাহিনীর কথা হারাইয়া যায় নিষ্ঠুর জগৎ সংসারের কঠিন চাপে, তখনও সেই বাবার মায়া প্রত্যেক মেয়ের স্মৃতির মিনারে নির্বিঘ্নে থাকে চির ভাস্বর ।
———-

বাবাবাবা ডাকি আমি নিজ মনে যারে,
তিনি আমায় ছেড়ে গেলেন পরোপাড়ে ।
এ মনযে মানে নাগো বুকযে ফেটে যায়,
দিবা নিশী অশ্রূ ঝরিছে বাবার মায়ায় ।

বাবা নেই এ পৃথিবী ছেড়ে গেলেন চলে,
কেউ ডাকবেন না কভু আমায় মা বলে ।
ওগো এ মনযে কেমন লাগে বাবা ছাড়া,
নীরবে নিভৃতে অন্তর কেঁদেই দিশাহারা ।

বাবার সব স্মৃতি সব কথাই মনে পড়ে,
শৈশব কৈশোর কাটে মোর বাবার ঘরে ।
বেড়েছি বাবার আদর সোহাগ শাসনে,
তাঁর চেয়ে নেই বড় কেহ এ হৃদয়াসনে ।

বাবা মিশে আছেন সুখে দুখে আনন্দে,
তাঁর স্মৃতি জীবনের প্রতিটি ছন্দে ছন্দে ।
আমার জানে মিশে আছে বাবার জান,
আজীবন তাঁর স্মৃতি বইবে এ মন প্রাণ ।

রোজই আমি করি দোয়া দুই হাত তুলে,
নামাজেও বসে কাঁদি আমি প্রাণ খুলে ।
আমার বাবা যেনগো বেহেস্ত নসীব হয়,
তুমি বাবাকে বেহেস্ত দিও ওগো দয়াময় ।
——-
শুক্রবার, ৬ই জানুয়ারী ২০১৭ইং
——-

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes