সুখস্মৃতি

কি যে বাহার!
ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের বাংলোটার।
মজবুত গ্রীলে সামনেটা ঘেরা,
দু-পাশে সবুজ সমারোহের বেড়াজাল।
মাথার উপরে লাল-নীল – হলুদে রাঙানো চূড়া
কৃত্রিমতা এড়িয়ে প্রাকৃতিক ফুলের সৌজন্যে।

বাইরে বৃষ্টি পড়ছিল অঝোর ধারায়,
জানালার ফাঁক দিয়ে ঢুকতে গিয়ে
হোঁচট খাচ্ছিল বারবার ।
সাহেবের বাংলো কিনা!

আমরা গুটিকয়েক তরতাজা প্রাণ,
আম- কাঁঠালের বনের পাতায় পাতায়
বৃষ্টি পড়ার টুপ- টাপ শব্দ,
শারদস্নাত সকালে ভিজে হিমেল বাতাসের
সুবাসটাকে শুষে নিতে চাইছিলাম এক লহমায়।

প্রকৃতির মাঝে ডুবে যাওয়ার একাগ্রতায়
বাধা পাচ্ছিলাম বারবার —-
পরিচারিকার নির্ভেজাল আদর আপ্পায়নে।
সাহেবের অতিথি তো!

গাম্ভীর্য্যে ভরা বাংলোর অন্তঃপুরী,
শূণ্যতাকে ভয় পেয়ে প্রাণবন্ত হতে চাওয়া,
সঙ্গী হিসেবে বেছে নেওয়া সচল আলো- বাতাসকে।
হোক না কৃত্রিমতায় ভরা,
নাই বা থাকলো কেউ চার দেওয়ালে ঢাকা।
বাংলোর ইজ্জত বজায় রাখা!

উঠি উঠি করেও উঠতে না পারা,
কেরাণিদের ঘনঘন আগমনে, কাজে অকাজে,
ইতি- উতি সংলাপে বেঁধে রাখা জমাট আড্ডাটা।
যেন শৈশবকে ফিরে পাওয়া!

সকলকে ছাপিয়ে যায় ছোট্ট এক বান্ধব,
আদুলগায়ে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে এসে
মিষ্টি হাসি হেসে যখন কৃতজ্ঞতা জানায়
মালকিনের দেওয়া চকোলেটের প্যাকেট-টার জন্য।

শুধু ভাবি আর ভাবতে থাকি —-
কত সুখে আছে ওরা! আমরা কেন নয়?
———

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes