বহু লোকের সমাগম —
হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকা এক নবীন চায়
এ-কোল সে-কোল বেয়ে ঘুরে ফিরে
প্রথম অন্নের স্বাদ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।
সারাটা দিনের শেষে ক্লান্ত সে এক চিরসুন্দর
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এক প্রবীনের ভরসাস্থলে।
প্রাজ্ঞ সে এক পৌঢ় অনাবিল সুখ খুঁজে পায়,
হারিয়ে যেতে চায় কষ্টের আগল ছাড়িয়ে সুখের সাগরে।
স্বপ্নসুখে ভেসে বেড়াতে বেড়াতে অতীতকে খুঁজতে থাকে,
ঝরাপাতায় পা বাড়িয়ে নবপত্র শোভা বাড়ায়।
নিন্দুকের দল গা এলিয়ে হাতড়ে বেড়ায় বিদ্রুপের অন্ধগলি।
স্বপ্নসুখের মসৃণ রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে,
শরীরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা দলাপাকানো ব্যথা বেদনা
তার অস্তিত্বের জানান দেয় আচমকা গভীরভাবে।
যন্ত্রনায় কুঁকড়ে থাকা শরীরটাকে বিছানায় এলিয়ে স্বস্তি খোঁজে,
শত চেষ্টায় ব্যথার উপশমে খুঁত থেকে যায় দেহের চিলেকোঠায়,
অক্ষম শরীরের মজবুতের কারিগর আজ ব্যস্ত নিজের শরীর ঘিরে।
তার দেহের অভ্যন্তরে বাসা বাঁধা জটিল ব্যাধি
অজ্ঞাতসারে বেড়ে ওঠে ভয়ানক রুপ ধারণে,
সারাটা শরীরকে ঘিরে ফেলে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়।
চারপাশে অজানা কৌতুহলীদের ভিড়ে গুটিয়ে রাখে নিজেকে।
ভবিষ্যতের সন্ধানে ছুটে যায় হাজার মাইল দূরে
অজানা, অচেনা অচিনপুরের দেশে ভালোর আশায়।
খোঁজ মেলে নতুনভাবে সে এক কুশীলবের
বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে তার কষ্টলাঘবে।
কাতর চোখে মলিন বদনে ধরা দেয় বন্ধুত্বের হাতছানি
নিরুপায় ভাবে নতজানু হয়ে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে।
সে এখনও বাঁচতে চায়, বাঁচতে যে হবেই তাকে
করার কাজ তার যে এখনও অনেক বাকী।
অক্ষম হয়ে বসে না থাকা করিতকর্মা সে এক বিদ্বজন,
হঠাৎ চুপসে যায় ফোলানো বেলুনে পিন ফোঁটার মত,
এত দিনের দেখা, চেনা আপন পৃথিবী যেন
ডানা মেলে অন্যরুপে, অন্যের সাথে হাত মেলায় ।
মনে হয় যেন ভাল ছিল পক্ষকাল আগের সোনালী দিনগুলো
যখন সে ভাবত না নিজেকে নিয়ে, নিজেদের জন্য ।
কোথা থেকে কি যে হোল সেদিন – যেদিন কিনা
ভালোবাসা, স্নেহ, মায়া-মমতা বাসা বাঁধলো তার অবুঝ মনে।
এই তো জীবন! কালের গতিতে ঝড়ের বেগে ভেসে যাওয়া
গলি থেকে রাজপথ – যাক্ না যেদিক বেয়ে ।
দৌড়ে কিংবা খোঁড়াতে খোঁড়াতে পোঁছাতেই হবে
অদৃষ্টের প্রদর্শিত নির্দ্দিষ্ট ঠিকানায়।
—————