সাগরের মন ভাল নেই: (কথোপকথন) ফখরুল করিম

ছেলে: হ্যালো—হ্যালো—হ্যালো—তুমি কী আমাকে শুনতে পাচ্ছ-হ্যালো

মেয়ে: জ্বী, বলেন (ঘুমের ঘোরে)।

ছেলে: কতদিন ভাবছি আপনাকে আমার মনের কথাগুলো বলব কিন্তু বলা হয়নি, আজ বলব আপনি দয়া করে শুনবেন, প্লীজ।

মেয়ে: হুমমম

ছেলে: আকাশের ঠিকানায় কত চিঠি লিখেছি, চিঠি লিখে লিখে আমি আজ ক্লান্ত। একটি চিঠিরও জবাব পায়নি। আসলে আমারই ভুল হয়েছে আপনার বাড়িতো আর আকাশে না, তাই না?

মেয়ে: হুমমমম

ছেলে: আপনাকে যেদিন প্রথম দেখি, সেদিন আমি দৌড়ে শাহবাগের মোড় থেকে দুটো কদম ফুল কিনে এনেছি। সাহসের অভাবে দিতে পারিনি। ভার্সিটির হলে ফিরে হৃদয়ের ক্রন্দন ঝরিয়েছি। আজকের দিনের মত মেঘাচ্ছন্ন ছিল আপনাকে দেখার দিনটি। আর এত অল্প বয়সে এভাবে কেউ নীল শাড়ি পড়ে?

মেয়ে: কী বলছেন (আবারও ঘুমের ঘোরে)

ছেলে: যেন জারুলের ফুল। জারুল ফুল দেখেছেন কখনো?

মেয়ে: হুমমমমমম

ছেলে: বাহ! আপনিতো বেশ রোমান্টিক। যে জারুল ফুল দেখেছে, তাঁর মধ্যে বাস করে রোমান্টিসিজম।

মেয়ে: তাই, বুঝি? আপনি কে?

ছেলে: আমি অচেনা এক মানুষ, আপনার পূজারী

মেয়ে: হুমমমমমমমম

ছেলে: জানেন, প্রতিদিন আমি ঐ গানটা শুনি।

মেয়ে: কোনটা?

ছেলে: ঐ যে, কে যেন খেয়েছে, আরে ধুত , দেখুন আপনার সাথে ফোনে কথা বলায় সবকিছু কেমন এলোমেলো যাচ্ছে, এত পরিচিত একজন শিল্পী——

মেয়ে: হুমমমমমমমমমমম

ছেলে: সরি, নামটা মনেই আসছে না, ভুলো মন, কী দিয়ে জাগাই তারে। বাদ দেন,,,,,  গানটাই বলি,,,আমার পূজার ফুল ভালবাসা তুমি ওগো—-

মেয়ে: হুমমমমম

ছেলে: যা করি, সব আপনার জন্যই, আপনাকে ভেবেই, আপনি কোথায় থাকেন?

মেয়ে: হুমমমমমমমমম

ছেলে: বলা যাবে না? আচ্ছা না বললেন। জানেন?

মেয়ে: হুমমমমমম

ছেলে: জানেন আপনার ঐ তিলটা না একদম অন্য রকম

মেয়ে: কী রকম (ঘুমের ঘোরে)

ছেলে: ফোনে না বলে, সরাসরিই বলব।

মেয়ে: হুমমমম

ছেলে: আপনার ফোন নাম্বার কত কষ্ট করে জোগাড় করেছি, তা কী জানেন?

মেয়ে: হুমমমমম

ছেলে: আপনি জানেন! (মৃদু হাসি) আপনি জানবেনইতো যেখানে মনের দ্বৈরথ, সেখানে কেউ কাউকে না জেনে কী পারে? আর কী জানেন—-নীলা।

মেয়ে: এই যে আপনি আমার নাম জানেন।

ছেলে: আরে এটা খুবই সহজ, ঐদিন আপনার বান্ধবীঈ তো আপনাকে নীলা বলে ডাকলো,,, আমি শ্রোতা হিসেবে তা ধারণ করেছি–

মেয়ে: হুমমমমম

ছেলে: সেদিনটিও ছিল আষাঢ়ের দিন, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছিল না, আজকেও আকাশে অনেক মেঘ কিন্তু বৃষ্টি নেই

মেয়ে: হুমমমমমম

ছেলে: ঐদিন বৃষ্টি হলে দারুন হতো, তাই না?

মেয়ে: হুমমমমম

ছেলে: মনে মনে একবার ভাবুনতো, বৃষ্টিতে নীল শাড়ি পড়ে আপনি ভিজছেন, ভেজা শাড়িতে আপনি দৌড়ে আমার দিকে আসছেন,,, আমি দূর থেকে আপনাকে দেখছি,, নীতম্বে লেপ্টে আছে আপনার শাড়ি   আর আপনার নাভীর আর পেটের মাংসগুলো মিলেমিশে যেন এক খন্ড সোনালী আকাশ।

মেয়ে: হুমমমম

ছেলে: ঐ আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরছে,, বৃষ্টিতে ভাল ফসল হয়, জানেন?

মেয়ে: হুমমমম

ছেলে: আমাকে দেবেন একটু চাষ করতে?

মেয়ে: কী বলছেন (রাগতস্বরে), আপনি কে?

ছেলে: আমি এক ভীরু মানুষ

মেয়ে: তা তো বুঝায় যাচ্ছে, না হলে কী এভাবে ফোনে কেউ বিরক্ত করে?

ছেলে: আপনি বিরক্ত হচ্ছেন?

মেয়ে: হুমমমম

ছেলে: ও   সরি!    আর করবো না।

মেয়ে: হুমমম

ছেলে: রাখবো?

মেয়ে: হুমমমম

ছেলে: হ্যালো—নীলা—হ্যালো—আমি সাগর—কী হলো তোমার,,তুমি কী সব হ্যা,হু করে যাচ্ছ, তুমিই না বললে আমাকে ফোন দিতে—

মেয়ে: তুমি সাগরই হও আর পাহাড়ই হও,,, প্লীজ রাখুন,, আমি এখন ঘুমাব ,,, অনেক ঘুম,,, যে ঘুমে আসবে আমার ফেলে আসা অতীত,,, আসবে আমার স্বামী,,,,হাসবে আমার মেয়ে,,,,, খুব ঘুম,,,অনেক ঘুম।

ছেলে: কী! তুমি বিবাহিতা!তোমার সন্তান আছে!

মেয়ে: তো,,, কী,,,,,,বিশ্বাস হয় না, আমার আকাশে অনেক বৃষ্টি,,,,ঝরতেই থাকবে, ঝরতেই থাকবে,,,,প্লীজ, ডোন্ট ডিস্টাব মী,,,,,ঘুম,,,খুব ঘুম,অনেক ঘুম,,,পাচ্ছে।

ছেলে: হ্যালো—-হ্যালো—-নীলা,,,,হ্যালো,,,,,,,,,নীলা।     [ লাইনটা কেটে যায়, স্যাড মিউজিক]

 

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes