প্রশ্ন করোনা
আমার বলা শব্দ গুলো কেন প্রতিস্হাপিত হতে চায় এখন
আরও ভালবাসা্য়, বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তায় পাড়ি জমায়
কেন বলি, শক্ত হও “বুকটা” হয়ত আমিই ভেংগে দেব!
এ কেমন ভালবাসা আমার? এ কেমন জল ও পানি
একই ধরন, একই বর্ন! শুধু আকার আয়তনে আলাদা!
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন বসে আছ, সদর দরজায়, চোঁখ মেলে ধরো যত দুর যায়
কেন ভাব, ডাক হরকরা ভীষন অলস আজকাল
তোমার রাস্তা মাড়াতে চায় না ভালবাসার অক্ষর গুলো!
কেন ভাবি, হয়ত বাউল আর গায় না গলা ছেড়ে এখন,
হয়ত বাউলী বাতাসীকে নিরাপদে রাখতে চায়
কেন রাখতে চায়, ধরা ছোয়ার বাইরে, দুরে, ঐ দুর আকাশে
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন কারনে অকারনে মাকে মনে পড়ে যায় আজকাল
কোন যোগ সুত্র পাইনা – কান্নার ভিতরের কান্নার
কেন বলি, মাগো – কেন বয়স বাড়াতে গেলে তোমার?
এখন কে দেখবে তোমার এই দামাল অবুঝ সন্তানকে?
কেন এ সময়ের আমি – করি মা, বয়স আর সময়ের যোগ সন্ধান?
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন জানতে মন চায় – আমার জবা গাছটা কেমন আছে?
কেন জানতে মন চায় – আমার মেহদি গাছটা কেমন আছে?
কেন ভাবি, হয়ত আজও ভূবন পাল আমার জবা ফুলেই পূজো দেয়
কেন ভাবি, অনুমতি না নিয়েই হয়ত মেহদি গাছের পাতা নিচ্ছে কেউ
পাড়ায় হচ্ছে নতুন কোন বিয়ে, পালা পার্বনের আয়োজন!
কেন, পুকুর পাড়ের তালগাছটা নেই আর, শব্দ পাই পাকা তাল পানিতে পড়ার শব্দ!
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন আমি হাটছি পিছনে, তাকিয়ে আছি সে দিকেই
কেন তোমাকে বলছি – এগিয়ে চল, তাকাও সামনে – ওখানেই মানুষ
কেন লুকাতে চাই – স্বপ্ন, প্রশন্ণপুর, আমি, আমাকে – তোমার প্রিয় গোধলী সন্ধা থেকে
কেন আমি, আমার সময়ের দেরি হয়ে যায় – তোমার চোখের কোন ভিজে ওঠে অভিমানে
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন নদীর ঘাটের বটবৃক্ষটা আর নেই, সেই চোট্ট বাবুই পাখীটা আর চোখে পড়ে না!
কেন ডাকাতীয়ায় চর পড়ে যায়, অসময়ে, উন্মাদনা হারায় আমার প্রিয় নদী!
কেন আজও মনে মনে খেয়া পারাপারের খোনারকে খুজি, নিস্প্রান ইস্পাত সেতুর উপর
যতদুর চোখ যায়, সে উপছে পড়া দু’কুল নেই, নেই ঘাটে বাধা বৌচোরা নৌকাটা!
কেন খুজি হাট’বারের দো’তারা ঢোলের গান, বেদে নৌকা,
নানা রংগের ছোট বড় লক্ষী মুর্তি; লবন পানির নোনতা ইলিশ
কেন আজও দেখি প্রয়াত আনিচ ভাইকে ঘুরে বেড়াতে “রহমত মন্জিলের” সামনে দিয়ে
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন সরু মনে হয় খিলা বাজারের গলি গুলি, ঘর গুলি আরও ছোট, আরও ছোট মানুষ
কেন নেই মাঝ বাজারের ছোট পোদ্দার, বড় পোদ্দারদের মসলা’র দোকান
নেই পোদ্দার বাড়ীর রতন’রা, হরে কৃষ্নরাও গ্রাম ছেড়েছে বহুদিন – কোথায়? কেউ জানে না!
যেই বাজার পেরিয়ে রাস্তায় নামি, কেন মাথা ঘুরিয়ে শুনীল স্যারের বাড়ীটা দেখি
স্যারের অন্য সব ভাই’রা ওপাড়ে, দেশকে ভালবেসে অকালে পরাপারে এখন শুনীল স্যার!
মুসলমানেরা কিনে নিয়েছে বাড়িটা, ও বাড়ীর পূজোর গাছটা এখন ইতিহাস, কেন
কেন বাঙ্গালীরাই বারে বারে সাম্প্রদায়িকতার জাবর কাটে, ভাই দাদাকে রক্তশুন্য করে
প্রশ্ন করোনা
প্রশ্ন করোনা
কেন আমার সমস্ত প্রেম, বাতাসীকে ছেড়ে সার্বজনীন হয়
কেন আমার ভালবাসা ছাপিয়ে যায় তোামায়, ছাপিয়ে যায় ডাকাতীয়া, প্রশন্নপুর, খিলাবাজার
কেন ঘুঘুর চরের একলা বাড়ীটা আজও একলা পড়ে আছে আমার গহীন মনে
কেন তোমাকে ভালবেসে স্মৃতি বেদনাতুর হই অপ্রাকৃতিক প্রকৃতির ভালবাসায়
কেন বাসতে পারিনা ভাল, একা তোমায় বাতাসী, অন্য সব আদর্শ প্রেমিকের মত
প্রশ্ন করোনা।
প্রশ্ন করোনা
কেন এই আমি এত স্বার্থপর প্রেমিক
কেন তুমি বাউলীর হাতটা ধরে শুধু কল্পনাতেই বেড়াতে চাই!
কেন তার পরও মরতে চাই না তোমাকে ছাড়া
কেন প্রেমের গান গেয়ে গেয়ে ধংস দেবতা হয়ে যাই
এই “অসভ্যে” ভরা তথাকথিত সভ্য ভুমিতে
প্রশ্ন করোনা।
৭ এপ্রিল ২০১৬
খোনার = খন্দকার, খেয়া নৌকার মাঝি
সমসাময়িক চিত্র।
ভালো লিখছেন।
শুভ কামনা রইলো