আজিকার এই গ্রীষ্মী সন্ধ্যা
বসে আছি একা ঘরে,
হঠাৎ করিয়া পুরানো ব্যাথায়
হৃদয় গিয়েছে ভরে।
বছর তিনেক হবে,
এই ভবে মোর বাবা ছিলো;
যিনি আজিকে অনেক দূরে।
না-জানি কি হেতু
যায়না-কো ভোলা তারে,
মোর ঘুম ঘোরে;
মাঝে মাঝে তারে স্বপন্ দেখি,
কাঁদি মোর অবসরে।
আজিকার এই গ্রীষ্মী সন্ধ্যা
দুনিয়ার সব ঘরে,
নিজ পরিবার তরে;
সকল পিতারা ফিরিছে গৃহে,
খুশী-সমারোহ করে।
ভাবিয়াছিলেম আজিকে আমার
হারানো-সে জনকেরে,
পাবোনাকো আর যাহার দেখা
এই জগতের পরে।
নিত্য সন্ধ্যা চাহিয়া থাকি
নীল আকাশের পরে,
শিশুদের মত করে।
লক্ষ তারার ভীড়ে,
পেয়ে যাই যদি তারে!
হাজার কথা বলিতাম তারে
একটা দুইটা করে।
“তোমার ছেলে এখন অনেক বড়,
সে একা একা সব পারে।”
আজিকার এই গ্রীষ্মী সন্ধ্যা
মোর উঠানের ধারে,
কাঁঠাল বৃক্ষে একজোড়া কাক
গাইছে আপন নীড়ে।
ঠিক পশ্চাতে একজোড়া ছানা
ডাকিয়াছে মৃদু স্বরে …….
“কি আনিছ দাওহে মোদের
ক্ষুধিত উদর ভরে।
কিছু যদি আজ নাই বা জোটে
এই বেলা ফির ঘরে,
তোমাদের বুকের স্নেহের গন্ধে
ক্ষুধা-জ্বালা যাবে মরে।”
দুই চোখে মোর প্লাবন হইল
স্নেহের বাঁধন পরে-
সকল অভাব তুচ্ছ লাগে
পিতা আছে যার ঘরে।
আজিকার এই গ্রীষ্মী সন্ধ্যা
বাবা নেই মোর ঘরে,
আজো মোর এই ব্যাকুল হৃদয়
কেঁদেযায় তার তরে।
— (রচনাকাল- ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২ বঙ্গাব্দ, ০১/০৬/২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ)