বেওয়ারিশ লাশ

লাশকাটা ঘরে নিঃশব্দে নিথর,
দেহটা শুধু আছে পড়ে,
ঝিম ধরা নিস্তব্ধতায়।
বেওয়ারিশ পরিচয়ে চাঞ্চল্যহীন।

এক নয়, দুইনয়, কতদিন
সে পলাতক, জানে না নিজেই।
এ পথ, সে পথ, অসীম দিগন্তরেখা,
পথ চলা তবু হয় না যে শেষ।

ছোট্ট সুখের একটা নীড়
ছিলো কি তার?
কে জানে, হয়তো ছিলো, হয়তো না।
সে সবই আজ অর্থহীন।

দশ মাস দশ দিন গর্ভধারিণীর,
নাড়ি ছেঁড়া ধন।
দরিদ্র জন্মদাতা পিতার,
ভবিষ্যত আশাবাদী অবলম্বন।

শহরের অন্য প্রান্তের,
কোনো এক অষ্টাদশী প্রেয়সীর,
হৃদয়ের গোপন কুঠুরিতে,
নিয়েছিল সে আপন ঠিকানা।

কেউ বলে সে সন্ত্রাসী।
অন্যেরা বলে, নানা, তা কেনো?
সেতো ছিলো রাজনৈতিক কর্মী।
আদর্শের শক্তিতে বলীয়ান।

মিছিলে, সমাবেশে, জ্বালাময়ী স্লোগানে,
মুখরিত রাজপথে, দৃপ্তপদক্ষেপ।
হরতালের পিকেটিংয়ে সর্বাগ্রে সক্রিয়।
অলক্ষ্যে নির্ধারিত তার শেষ মুহূর্ত।

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ঙ্কর রূপ,
দুর্ভাগ্য তার, ছিলনা যে জানা।
রক্ত পিপাসায় উন্মক্ত ভাবলেশহীন।
প্রচন্ড নিষ্ঠুরতায় আতঙ্ক মূর্তিমান।

বিচারবিহীন লালসার পাশবিকতায়,
অবরুদ্ধ অসহায় বিবেক।
মিথ্যা আর কপটতার রণসজ্জায় শাণিত,
রাষ্ট্র আজ ভারী পাহাড়সম।

লাশকাটা ঘরে নিঃশব্দে নিথর,
দেহটা শুধু আছে পড়ে,
ঝিম ধরা নিস্তব্ধতায়।
বেওয়ারিশ পরিচয়ে চাঞ্চল্যহীন।

0.00 avg. rating (0% score) - 0 votes